Friday, February 14, 2014

Genesis(আদিপুস্তক)

অধ্যায় ১০ ১১ ১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮ ১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫ ২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১ ৩২ ৩৩ ৩৪ ৩৫ ৩৬ ৩৭ ৩৮ ৩৮ ৪০ ৪১ ৪২ ৪৩ ৪৪ ৪৫ ৪৬ ৪৭ ৪৮ ৪৯ ৫০

আদিপুস্তক ১
 সৃষ্টির শুরুতে ঈশ্বর আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করলেন। 
 পৃথিবীর উপরিভাগ তখনও কোন বিশেষ আকারপ্রাপ্ত হয়নি, আর তার মধ্যে জীবন্ত কিছুই ছিল না; তার উপরিভাগ ছিল অন্ধকাচ্ছন্ন ও গভীর জল। ঈশ্বরের আত্মা সেই জলের উপরে চলাফেরা করছিলেন। 
৩-৫ ঈশ্বর বললেন, আলো হোক। আর তাতে আলো হল। তিনি দেখলেন তা চমৎকার হয়েছে। তিনি অন্ধকার থেকে আলোকে পৃথক করে আলোর নামকরণ করলেন দিন আর অন্ধকারের নামকরণ করলেন রাত্রি। এইভাবে সন্ধ্যাও উত্তীর্ণ হল সকালও উত্তীর্ণ হল, আর সেটিই ছিল প্রথম দিন।
তারপর ঈশ্বর বললেন, জলকে দুভাগ করবার জন্য আকাশমণ্ডলের ব্যবস্থা হোক।
তাই ঈশ্বর আকাশমণ্ডলের সৃষ্টি করে জলকে পৃথক করলেন। এক ভাগ জল আকাশমণ্ডলের উপরে আর অন্য ভাগ জল আকাশমণ্ডলের নীচে থাকল।
ঈশ্বর আকাশমণ্ডলের নাম দিলেন আকাশ। সন্ধ্যা হল আর তারপর সকাল হল। এটা হল দ্বিতীয় দিন।
তারপর ঈশ্বর বললেন, আকাশের নীচের জল এক জায়গায় জমা হোক যাতে শুকনো ডাঙা দেখা যায়। এবং তা-ই হল।
১০ ঈশ্বর শুকনো জমির নাম দিলেন, পৃথিবী এবং এক জায়গায় জমা জলের নাম দিলেন, মহাসাগর। ঈশ্বর দেখলেন ব্যবস্থাটা ভাল হয়েছে।
১১ তখন ঈশ্বর বললেন, পৃথিবীতে ঘাস হোক, শস্যদায়ী গাছ ও ফলের গাছপালা হোক। ফলের গাছগুলিতে ফল আর ফলের ভেতরে বীজ হোক। প্রত্যেক উদ্ভিদ আপন আপন জাতের বীজ সৃষ্টি করুক। এইসব গাছপালা পৃথিবীতে বেড়ে উঠুক। আর তাই-ই হল।
১২ পৃথিবীতে ঘাস আর শস্যদায়ী উদ্ভিদ উত্পন্ন হল। আবার ফলদাযী গাছপালাও হল, ফলের ভেতরে বীজ হল। প্রত্যেক উদ্ভিদ আপন আপন জাতের বীজ সৃষ্টি করল এবং ঈশ্বর দেখলেন ব্যবস্থাটা ভাল হয়েছে।
১৩ সন্ধ্যা হল এবং সকাল হল। এভাবে হল তৃতীয় দিন।
১৪ তারপর ঈশ্বর বললেন, আকাশে আলো ফুটুক। এই আলো দিন থেকে রাত্রিকে পৃথক করবে। এই আলোগুলি বিশেষ সভাশুরু করার বিশেষ বিশেষ সংকেত হিসেবে ব্যবহৃত হবে। আর দিন ও বছর বোঝাবার জন্য এই আলোগুলি ব্যবহৃত হবে।
১৫ পৃথিবীতে আলো দেওয়ার জন্য এই আলোগুলি আকাশে থাকবে। এবং তা-ই হল।
১৬ তখন ঈশ্বর দুটি মহাজ্যোতি বানালেন। ঈশ্বর বড়টি বানালেন দিনের বেলা রাজত্ব করার জন্য আর ছোটটি বানালেন রাত্রিবেলা রাজত্ব করার জন্য। ঈশ্বর তারকারাজিও সৃষ্টি করলেন।
১৭ পৃথিবীকে আলো দেওয়ার জন্য ঈশ্বর এই আলোগুলিকে আকাশে স্থাপন করলেন।
১৮ দিন ও রাত্রিকে কর্তৃত্ত্ব দেবার জন্য ঈশ্বর এই আলোগুলিকে আকাশে সাজালেন। এই আলোগুলি আলো আর অন্ধকারকে পৃথক করে দিল এবং ঈশ্বর দেখলেন ব্যবস্থাটা ভাল হয়েছে।
১৯ সন্ধ্যা হল এবং সকাল হল। এভাবে চতুর্থ দিন হল।
২০ তারপর ঈশ্বর বললেন, বহু প্রকার জীবন্ত প্রাণীতে জল পূর্ণ হোক আর পৃথিবীর ওপরে আকাশে ওড়বার জন্য বহু পাখী হোক।
২১ সুতরাং ঈশ্বর বড় বড় জলজন্তু এবং জলে বিচরণ করবে এমন সমস্ত প্রাণী সৃষ্টি করলেন। অনেক প্রকার সামুদ্রিক জীব রয়েছে এবং সে সবই ঈশ্বরের সৃষ্টি। যত রকম পাখী আকাশে ওড়ে সেইসবও ঈশ্বর বানালেন। এবং ঈশ্বর দেখলেন ব্যবস্থাটি ভাল হয়েছে।
২২ ঈশ্বর এই সমস্ত প্রাণীদের আশীর্বাদ করলেন। ঈশ্বর সামুদ্রিক প্রাণীদের সংখ্যাবৃদ্ধি করে সমুদ্র ভরিয়ে তুলতে বললেন। ঈশ্বর পৃথিবীতে পাখীদের সংখ্যাবৃদ্ধি করতে বললেন।
২৩ সন্ধ্যা হয়ে গেল এবং তারপর সকাল হল। এভাবে পঞ্চম দিন কেটে গেল।
২৪ তারপর ঈশ্বর বললেন, নানারকম প্রাণী পৃথিবীতে উত্পন্ন হোক। নানারকম বড় আকারের জন্তু জানোয়ার আর বুকে হেঁটে চলার নানারকম ছোট প্রাণী হোক এবং প্রচুর সংখ্যায় তাদের সংখ্যাবৃদ্ধি হোক। তখন য়েমন তিনি বললেন সব কিছু সম্পন্ন হল।
২৫ সুতরাং ঈশ্বর সব রকম জন্তু জানোয়ার তেমনভাবে তৈরী করলেন। বন্য জন্তু, পোষ্য জন্তু আর বুকে হাঁটার সবরকমের ছোট ছোট প্রাণী ঈশ্বর বানালেন এবং ঈশ্বর দেখলেন প্রতিটি জিনিসই বেশ ভালো হয়েছে।
২৬ তখন ঈশ্বর বললেন, এখন এস, আমরা মানুষ সৃষ্টি করি। আমাদের আদলে আমরা মানুষ সৃষ্টি করব। মানুষ হবে ঠিক আমাদের মত। তারা সমুদ্রের সমস্ত মাছের ওপরে আর আকাশের সমস্ত পাখীর ওপরে কর্তৃত্ত্ব করবে। তারা পৃথিবীর সমস্ত বড় জানোয়ার আর বুকে হাঁটা সমস্ত ছোট প্রাণীর উপরে কর্তৃত্ত্ব করবে।
২৭ তাই ঈশ্বর নিজের মতোই মানুষ সৃষ্টি করলেন। মানুষ হল তাঁর ছাঁচে গড়া জীব। ঈশ্বর তাদের পুরুষ ও স্ত্রীরূপে সৃষ্টি করলেন।
২৮ ঈশ্বর তাদের আশীর্বাদ করে বললেন, তোমাদের বহু সন্তানসন্ততি হোক। মানুষে মানুষে পৃথিবী পরিপূর্ণ করো এবং তোমরা পৃথিবীর নিয়ন্ত্রণের ভার নাও, সমুদ্রে মাছেদের এবং বাতাসে পাখিদের শাসন করো। মাটির ওপর যা কিছু নড়েচড়ে, যাবতীয় প্রাণীকে তোমরা শাসন করো।
২৯ ঈশ্বর বললেন, আমি তোমাদের শস্যদায়ী সমস্ত গাছ ও সমস্ত ফলদাযী গাছপালা দিচ্ছি। ঐসব গাছ বীজযুক্ত ফল উত্‌পাদন করে। এই সমস্ত শস্য ও ফল হবে তোমাদের খাদ্য।
৩০ এবং জানোয়ারদের সমস্ত সবুজ গাছপালা দিচ্ছি। তাদের খাদ্য হবে সবুজ গাছপালা। পৃথিবীর সমস্ত জন্তু জানোয়ার, আকাশের সমস্ত পাখি এবং মাটির উপরে বুকে হাঁটে য়েসব কীট সবাই ঐ খাদ্য খাবে। এবং এই সব কিছুই সম্পন্ন হল।
৩১ ঈশ্বর যা কিছু সৃষ্টি করেছেন সেসব কিছু দেখলেন এবং ঈশ্বর দেখলেন সমস্ত সৃষ্টিই খুব ভাল হয়েছে। সন্ধ্যা হল, তারপর সকাল হল। এভাবে ষষ্ঠ দিন হল।

0 comments:

Post a Comment